Monday, December 22, 2014

প্রতিটি রোগীই অনন্য




হোমিওপ্যাথিতে প্রতিটি রোগীকে পৃথক হিসেবে অর্থাৎ পৃথক মানবসত্ত্বা হিসেবে বিবেচনা করে তার চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অন্যান্য চিকিৎসাব্যবস্থার মত এখানে রোগের নামে কোন চিকিৎসা দেয়ার বিধান নেই। যেমন- এ টি ডায়রিয়ার ঔষধ, ঐ টি ব্যথার ঔষধ  , ঐ টি অনিদ্রার জন্য, এটি ঠান্ডার ঔষধ ইত্যাদি। রোগী যদি জিজ্ঞেস করেন ”আপনি কি আমার আমার ডায়রিয়ার জন্য কিছু ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন? সেক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসকের জবাব হবেঃ ”না, তবে আপনার জন্য আমার কাছে এমন একটি আরোগ্যকর ঔষধ আছে যা আপনার স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনবে অর্থাৎ আপনাকে আরোগ্য করবে।”। বলা বাহুল্য – আমাদের চর্মচক্ষু বা ল্যাবটেষ্টর আলোকে কিছু রোগী একই জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হলেও – হোমিওপ্যাথিতে এই আরোগ্যকর ঔষধটি প্রতিটি রোগীর জন্যই পৃথক। রোগীর জন্য এটাই গুরুত্বপূর্ণ যে তিনি ঠিক কেমন অনুভব করছেন তার একটি বাস্তব চিত্র তথা লক্ষণসমষ্টি চিকিৎসকের নিকট উপস্থাপন করবেন। এভাবেই হোমিওপ্যাথ ঐ রোগীর কেসটিকে গভীরভাবে অনুসন্ধান করবেন এবং  পরিষ্কাররূপে  হৃদয়ঙ্গম করবেন যে - এই ডায়রিয়া রোগীর ডায়রিয়া কোন্ বিবেচনায় বা কিভাবে অন্য ডায়রিয়া রোগী থেকে অনন্য বা আলাদা। হতে পারে এই রোগী সর্বদাই অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত এবং প্রতিবার মলত্যাগের পর তিনি ভালবোধ করছেন। যেখানে অন্য একজন রোগী আদৌ তৃষ্ণার্ত নাও হতে পারেন এবং ২/১ বার মলত্যাগের পর দুর্বল, অবসন্ন হয়ে বিছানায় ঢলে পড়তে পারেন। রোগীর রোগ নির্ণয়ের সাথে এই লক্ষণাবলী সরাসরি সম্পৃক্ত নয়। তবুও এই লক্ষণাবলী রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের পরিচয় বহন করে। রোগীর মল পরীক্ষার রিপোর্টে এ্যামিবা বা সালমোনেলা ধরা পড়লো কিনা হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদানের ক্ষেত্রে তার কোনই ভূমিকা নেই। মজার ব্যাপার হলো - যদি মল পরীক্ষায় এ্যামিবা বা সালমোনেলা পাওয়াও যায় – তবুও আরোগ্যদায়ক হোমিও ঔষধ তা সমূলেই বিনাশ করে রোগ নিরাময় করবে - এ্যান্টবায়োটিকের কোন প্রয়োজন ছাড়াই। এটিই প্রাকৃতিক চিকিৎসা। এমন হাজারো লক্ষণাবলী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রুভিংকালে আমাদের গোচরীভূত হয়েছে যা দ্বারা সমৃদ্ধ হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা। প্রাকৃতিক এই নিয়ম বদলাবার নয়। এখানে ইতরপ্রাণী তথা – ইঁদুর, বানর, গিনিপিগের উপর ঔষধ প্রয়োগ করে বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা বা চিকিৎসার নামে তা মানুষের উপর প্রয়োগ করার  মত ভ্রান্ত-বাতিল ধারণার কোনই সুযোগ নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানের নামে এ কোন আজব চিকিৎসা ব্যবস্থা? হোমিওপ্যাথিতে সুস্থ মানবদেহের উপর ঔষধ পরীক্ষা করে কৃত্রিম রোগ লক্ষণসমষ্টি পাওয়া যায় – প্রাকৃতিক রোগে ঐ একই লক্ষণসমষ্টি সম্পন্ন রোগীকে ঐ একই ঔষধ প্রয়োগে আরোগ্য করা হয়। এই পদ্ধতি অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত, দ্রুত আরোগ্যদায়ক এবং নির্মল।
হোমিও চিকিৎসকের নিকট অধিক গুরুত্বপূর্ণ রোগীর মধ্যে প্রাপ্ত অদ্ভুত, আশ্চর্যজনক ও বিরল লক্ষণসমূহ। যেমন- ”শুষ্ক মুখ অথচ অনেক তৃষ্ণার্ত” কোন আকর্ষণীয় লক্ষণ নয় যদি তাকে তুলনা করা হয় ”মুখগহ্বরের মারাত্মক শুষ্কতা কিন্তু একদম পিপাসাহীন” এই লক্ষণের সাথে। ”শ্বাসকষ্ট, মুক্ত বাতাস পেলে এবং বসে থাকলে উপশম বোধ করা” চিকিৎসকের মনোযোগ ততোটা আকর্ষণ করবেনা যতোটা করবে ”শ্বাসকষ্ট, উপুড় হয়ে শয়ন করলে উপশম  বোধ”। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কর্তব্য গোয়েন্দার মত প্রতিটি রোগীর এই সকল অদ্ভুত এবং স্বতন্ত্র রোগলক্ষণসমূহ অনুসন্ধান করা। ল্যাব টেস্টের গুরুত্ব এখানে নিতান্তই সামান্য বা একদমই নেই।
মানবের পৃথক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার একটি নিঁখুত সৃষ্টি। পৃথিবীর সাতশত কোটি মানুষের মধ্যে এমন দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যাদের হাতের ছাপ হুবহু মিলে যায়। আমরা কেবল আমাদের চেহারা, শারীরিক কাঠামো বা বৈশিষ্ট্যে পৃথক নই - বরং আমাদের মনোভাব, চিন্তা-চেতনা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায়ও পৃথক। প্রতিটি মানুষের পৃথক পছন্দ-অপছন্দ, ভালোলাগা-মন্দলাগার বিষয় আছে। আমরা সর্বদাই পৃথিবীতে আমাদের জীবনের জন্য সুখকর স্থানটি খুঁজে ফিরি এবং এমন কাউকে খুঁজি যাকে আমরা ভালবাসতে পারি। আমরা আমাদের পছন্দের পোষাক পরি এবং খাবার খাই। আমরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে আমাদের সুখ ও আনন্দকে খুঁজি। আমরা বিভিন্ন উপায়ে আমাদের সুখ ও আনন্দকে প্রকাশ করি। আমাদের পরিচয়েই আমাদের মনোভাব, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, দুঃখবোধ-আনন্দবোধ ফুঁটে ওঠে। এ সকলই পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার পরম উদারতা ও সৃষ্ট জীবের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালবাসার কারণে। ঠিক যেভাবে আমাদের নাম দ্বারা আমাদের চিহ্নিত করা যায় - সেভাবেই আমাদের আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গী ও  কাজ দ্বারাও আমাদের চেনা যায় এবং আলাদা সত্ত্বা হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
প্রতিটি সুস্থ মানবের মধ্যে এই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধান করতে গেলে দেখা যাবে আমরা প্রকৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছি। এতে করে আমরা প্রকৃতির বিভিন্ন অবয়বকে স্বীকার করতে এবং তাদের গ্রহণ করতে শিখি। হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে গবেষণা আমাদের জীবনের নানাবিধ চিত্র এবং এর ধরণ সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে সুস্পষ্ট করে দেয়। মানুষ রুগ্ন অবস্থায় সুনির্দিষ্টভাবে কি কি অদ্ভুত ও আশ্চর্যজনক আচরণ করে তা জানার জ্ন্য মানুষ স্বাভাবিক-সুস্থ অবস্থায় কোন্ ধরণের আচরণ করে বা মানুষের স্বরূপ কত রকম হতে পারে তা অনুসন্ধান করা এবং সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা হোমিওপ্যাথের অবশ্য কর্তব্য। একারণেই একজন প্রকৃত হোমিও চিকিৎসক তিনিই যিনি শুধু খোলা চর্মচক্ষু দ্বারা রোগীর বাহ্যিক বা শারীরিক অবস্থা-কাঠামো অবলোকন করেন না বরং তিনি তার ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় দ্বারা অর্থাৎ গভীর অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা রোগীর সবকিছু হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করেন। তথাকথিত ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের চেয়ে একজন হোমিও চিকিৎসকের রোগী সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খু ধারণা লাভ অত্যন্ত কঠিন কাজ যদিও রোগী সম্পর্কে বাস্তব চিত্র কেবল এভাবেই পাওয়া যায়। হোমিওপ্যাথকে প্রতিটি রোগীর ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য নির্ণয় করতে হয় রোগীর প্রকৃতি, চরিত্র, তার অসুস্থতার কারণ, রোগীর রোগের অদ্ভুত লক্ষণাবলী ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করে। হোমিওপ্যাথিতে রোগীর কেসগুলি যখন বিবেচনা করা হয় তখন চিকিৎসকের কার্যাবলীর কেন্দ্রবিন্দুতে যে বিষয়টি থাকে তাহলো প্রতিটি রোগীর রুগ্নাবস্থার উত্তোরোত্তর উন্নতি এবং আরোগ্য সাধন। হোমিও চিকিৎসক কখনও এ নিশ্চয়তা দিতে পারেন না বা দেন না যে একটি নির্দিষ্ট ঔষধে কোন রোগীর রোগ নিরাময় করতে সমর্থ হলেও - সেই একই ঔষধে  একই লক্ষণবিশিষ্ট অন্য কোন রোগীর রোগ নিরাময় করতে পারবেন। কারণ ঐ উভয় রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের মধ্যে কিছু বৈসাদৃশ্য থাকবেই। অধিকন্তু, প্রতিটি রোগীর চিকিৎসার জন্য যে ঔষধের প্রয়োজন তা ঐ ব্যক্তির ঐ রোগের প্রতি প্রতিক্রিয়া ও সংবেদনশীলতার মত ভিন্ন।
কেবল সঠিক আরোগ্যদায়ক ঔষধ নির্বাচনই যথেষ্ট নয় বরং ঐ ঔষধ কোন্ নির্দিষ্ট শক্তিতে রোগীকে সেবন করানো হবে তাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঔষধের শক্তিও রোগীভেদে পৃথক হয়। নাহলে রোগী আরোগ্য সম্ভব নয়। এজন্যই হোমিওপ্যাথিকে বলা হয় “Like cures Like” বা ”হোমিওপ্যাথি সাদৃশ্যের বিজ্ঞান”। এখানে ঔষধের শক্তির সাথে রোগীর আভ্যন্তরীণ রোগের শক্তির সাদৃশ্য থাকা চাই। উদাহরণস্বরূপ, যে রোগী তাপমাত্রার প্রতিটি পরিবর্তনে অসুস্থ হয়ে পড়েন বা চাঁদের বিভিন্ন অবস্থা তথা- অমাবস্যা, পূর্ণিমা বা নতুন চাঁদ দেখা দিলে রোগের উন্নতি-অবনতি হয় বা দৈনন্দিন সমস্যাবলী রোগীকে প্রতিনিয়ত ভোগায় – এমন রোগীকে কখনও উচ্চ শক্তির ঔষধ প্রয়োগের জন্য বিবেচনা করা যায়না।
প্রতিটি রোগীর ব্যক্তিগত লক্ষণাবলী বিশ্লেষণ এবং তার ভিত্তিতে পরামর্শপ্রদান হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশেষ করে যখন হোমিওপ্যাথিক বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। নিরাময় প্রক্রিয়ারও বিভিন্ন পর্যায় আছে। কোন কোন পর্যায়ে এমন কিছু ঘটতে পারে যা রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের এমনকি রোগীর নিজের বিরক্তি উৎপাদন করে। এ পর্যায়ে রোগীর সম্পূর্ণ আরোগ বিধানের জন্য রোগী ও তার পরিবারকে চিকিৎসক কর্তৃক ব্যক্তিগতভাবে কাউন্সেলিং করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একজন হোমিওপ্যাথ শুধুমাত্র আরোগ্যদায়ক ঔষধ নির্বাচন করেই ক্ষান্ত হন না। রোগী কিসে আরামবোধ করেন এবং কিসে কষ্ট অনুভব করেন তা যত্ন ও সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা উচিত। অধিকন্তু, কোন বিষয়ে রোগীর সাথে সরাসরি বিরোধিতায় লিপ্ত হওয়া বা রোগীর সমালোচনা করা উচিত নয়। রোগী কিভাবে চিকিৎসকের প্রশ্নের প্রতি তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তার প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা উচিত এবং রোগীর স্বতন্ত্রতা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। চিকিৎসকের উচিত মেটেরিয়া মেডিকা হতে এমন একটি ঔষধ খুঁজে বের করা যা রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের দিকে খেয়াল রেখে চিকিৎসককে প্রতিটি কাজ করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, এমন কোন সার্বজনীন খাবার নেই যা সকল ব্যক্তির জন্য ভাল খাবার বলে বিবেচিত হতে পারে। এমন কোন রোগী থাকতে পারেন যিনি অতি মাত্রায় এ্যাসিডিটিতে ভোগেন অথচ লেবুর রস খাওয়ার পর তিনি ভালবোধ করেন। অথবা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন এমন একজন রোগী হয়তো চলাফেরা-কাজের মধ্যে থাকলে বা ব্যায়াম করলে ভালবোধ করেন। তাকে বিছানায় শুয়ে থেকে বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেয় অনুচিত। আমাদের সকল সময় রোগীর ব্যক্তিগত চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
রোগীর উপসর্গ যত অদ্ভুত ও বিরল হবে রোগীর প্রতি আমাদের অন্তর্দৃষ্টি ততোটা স্বতন্ত্র হবে।  আমরা যদি গ্যাষ্ট্রাইটিস-এ আক্রান্ত একজন রোগীর উদাহরণ দেখি (যার অবস্থা সাধারণত খাওয়ার পরই অধিকতর খারাপ হওয়ার কথা) অথচ এখানে আমরা দেখবো এই রোগী খাবারের পরই বরং ভালবোধ করেন। সুনির্দিষ্ট ভাবে হ্রাস-বৃদ্ধির এই প্রকৃতিটি চিকিৎসকের নিকট অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। আরো একটি উদাহরণ হিসেবে আমরা হোমিওপ্যাথিক রেমিডি আর্সেনিকাম এ্যালবামের কথা উল্লেখ করতে পারি যেখানে জ্বালাকর বেদনা উপশম হয় উষ্ণ খাবার, পানীয় বা গরম বাহ্যিক ব্যবহারে অর্থাৎ গরম সেঁকে।
চিকিৎসকের নিকট রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নির্ণয়ের জন্য রোগের সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গের কোনই মূল্য নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একজন নির্দিষ্ট রোগীর ক্ষেত্রে কোন্ ধরণের সুনির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া কাজ করে তা খুঁজে বের করা। উদাহরণস্বরূপ, মূত্রথলি বা ব্লাডার সংক্রমণে (ধরুন কোলিব্যাসিলাস দ্বারা সংক্রমণের ক্ষেত্রে) আক্রান্ত দু’জন রোগীর ক্ষেত্রে আমরা দেখতে চেষ্টা করবো ঐ দু’টি রোগীর মধ্যে কি এমন আছে যা তাদের অসুস্থতাকে পৃথক করে তোলে। তাদের উভয়েরই বারংবার মূত্রত্যাগের বেগ, মূত্রথলির জ্বালাকর ব্যথা এবং হালকা জ্বর থাকতে পারে। এগুলি সবই এই জাতীয় ইনফেকশনের অর্থাৎ সংক্রমণের অত্যন্ত সাধারণ চরিত্র ও লক্ষণাবলী। ফলতঃ তাদের উপর ভিত্তি করে কোন আরোগ্যদায়ক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রেসক্রাইব করা সম্ভব নয়। আমাদের দু’জন রোগীর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের দিকে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, জ্বালাকর এই বেদনাটি কি প্রস্রাবত্যাগের সময়ে নাকি আগে-পরে ঘটছে? ব্যথার প্রকৃতিই বা কি? এটি কি তীক্ষ্ম ব্যথা, নাকি ছুরি দিয়ে কেটে ফেলার মত, নাকি স্পন্দিত, নাকি জ্বালাকর ব্যথা? প্রস্রাবের গন্ধই বা কেমন? গন্ধটি কি ঘোড়ার প্রস্রাবের ন্যায় নাকি অ্যামোনিয়ার ন্যায় নাকি এ্যাসপ্যারাগাছ বা শতমূলীর ন্যায়? বিশেষতঃ একিউট রোগীর ক্ষেত্রে এই ধরণের হ্রাস-বৃদ্ধির তাৎপর্য অনেক। হ্রাস-বৃদ্ধির এই স্বাতন্ত্র্যের মধ্যেই আমরা রোগের তথা রোগীর মধ্যে স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করতে পারি। এই স্বাতন্ত্র্য যত স্পষ্ট, চিকিৎসা ততোই চমৎকারভাবে সম্পন্ন হয়।
রোগীর জন্য সঠিক আরোগ্যদায়ক ঔষধটির সন্ধান পেতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়। আর এটি করতে পারলে তিনি রোগীকে দ্রুত, নির্মল ও স্থায়ী আরোগ্যদান করতে সক্ষম হবেন। এখানে শর্টকাট বা ঝক্কি-ঝামেলামুক্ত কোন সহজ বিকল্প নেই। প্রতিনিয়ত তাদের হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা, হোমিওপ্যাথিক দর্শন ইত্যাদি সম্পর্কে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও গবেষণা করে যেতে হবে কারণ এসব পুস্তকে রচিত হয়েছ মানবজীবনে বাস্তব প্রকৃতি।  রোগীর অসুস্থ অবস্থায় এগুলির সন্ধান পেতে হলে সুস্থ অবস্থায় ঐ প্রকৃতিকে জানা এই অধ্যয়ন থেকেই সম্ভব।  হোমিওপ্যাথি প্রকৃতই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের বিজ্ঞান।

বিএম বেনজীর আহমেদ
কনসাল্টেন্ট হোমিওপ্যাথ
উপ-পরিচালক, পিএটিসি।
Email: drbenojir@gmail.com
Website: drbenojir.com
Cell: +8801733 797252

Friday, December 19, 2014

আমি অসুস্থ না আমার শরীর?




ল্যাবরোটরিজ পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের প্রকৃত কারণ নির্ধারণ করাটা প্রকৃত পক্ষে খুব চ্যালেন্জিং। রোগের কারণ নির্ণয় করতে দক্ষ ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন চিকিৎসক, আধুনিক হাসপাতাল-ক্লিনিক, অত্যাধুনিক মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি সকল কিছুর দ্বারা সর্ব্বোচ্চ চেষ্টাও করা হয় । প্রতিটি ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে চিহ্নিত করা হয় এবং তার কোন না কোন নাম দেয়া হয়। এত প্রচেষ্টার পরও ঐ রোগটি আসলে কি এবং রোগীই বা কে তা অজানাই থেকে যায়। প্রকৃতপক্ষে, রোগ নির্ণয়ের নামে প্রতিটি ক্ষেত্রে এক একটি লেবেল দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
ল্যাবেরটরিতে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়, রোগ নির্ধারণ করা হয় এবং এর পর রোগকে ধ্বংস করতে শক্তিশালী ষ্টেরয়েড, কর্টিজন, এন্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ইত্যাদি ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। চিকিৎসার আগে-পরে এক্সরে ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্ট রিপোর্টের মধ্যে পারস্পারিক তুলনা করা হয় এবং ঐ সকল বিজ্ঞানিক তথ্যাদি ব্যবহারের উপর নির্ভর করে রোগ চিকিৎসার সর্বশেষ ফলাফল একটি সম্পর্কে চুড়ান্ত মন্তব্য করা হয়। যে রোগীর পায়ের অস্থিতে টিউমার হয়েছে তার অস্থিটি কর্তন করা হয়। কয়েকবারের ফলোআপ চিকিৎসার পর এবং অবশ্যই হরেক রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগী রোগমুক্ত হয়েছে বা আরোগ্য লাভ করেছে মর্মে ঘোষণা করা হয়। যে রোগী ২০ বছর যাবত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগেছন এবং নিয়মিতই ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়ে আসছেন তার অভিযোগ ”আমি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছি”। তাকে প্রতিবারই জোলাপ বা রেচক জাতীয় ঔষধ বা কোষ্ঠ পরিষ্কার করে এমন কোন ঔষধ সেবন করানো হচ্ছে। তার রোগ লক্ষণাদি প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতির ভাষা - যা রোগের গতিশীল সত্ত্বার বহিঃপ্রকাশ। রোগী কেন বলেনা যে ”আমার অন্ত্র বা অভ্যন্তরপ্রদেশের কোষ্ঠকাঠিন্য” বরং সে বলে ”আমি কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত”। কিন্তু দুঃখের বিষয় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মানসিক ও আবেগ সম্পৃক্ত বিষয়সমূহ সর্বদাই অগ্রাহ্য করা হচ্ছে।
একজন রোগী চিকিৎসা গ্রহণের লক্ষ্যে ডাক্তারের নিকট যায় এবং বলে ”আমি অসুস্থ”, ”আমি ভালবোধ করছি না”। তখনই জেনারেল ফিজিশিয়ান অথবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুরু করেন একটির পর একটি মেডিক্যাল পরীক্ষা। উদ্দেশ্য রোগ নির্ণয়। তারা রোগীকে নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন। চিন্তিত রোগীর রোগ নিয়ে যা তাদের ভাষায় শুধু শারীরকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। তাই তারা অবশ্য পুঙ্খানুপুঙ্খুরূপে রোগীর শরীরটি অধ্যয়ন করেন। তারা যদি শেষ পর্যন্ত কোন কিছু খুঁজে পেতে সমর্থ না হন তবে রোগটিকে মনোদৈহিক লেবেল লাগিয়ে দেবেন এবং রোগীকে মনোস্তাত্তিক বা মানসিক রোগের চিকিৎসকের নিকট পাঠিয়ে দেবেন। আর এটি তখনই ঘটে যখন রোগীর সকল পরীক্ষার ফলাফল স্বাভাবিক রেঞ্জের মধ্যে থাকে। কোন কিছু নরমাল রেঞ্জ অতিক্রম না করলে তারা রোগের কোন নামকরণ করতে অপারগ। অথচ রোগী সকল সময়েই কোন না কোন কষ্ট-যন্ত্রণা নিয়েই তো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে। কষ্ট-যন্ত্রণা-ভাল না লাগার যে অনুভূতি তাকে যন্ত্র দিয়ে কিভাবে নির্ণয় করা যাবে? তার তো কোন ওজন-আকৃইত নেই, নেই কোন রং। কষ্ট-যন্ত্রণাতো কেবলই অনুভূতি। রোগী বা তাকে যিনি দেখাশুনা করেন তার কাছ থেকেই এর একটি জীবন্ত চিত্র পাওয়া সম্ভব। ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাস সবক্ষেত্রে এই কষ্টের কারণ নয় যে তা যন্ত্রে ধরা দেবে।
এখানে লক্ষণীয়, যদি শারীরিক স্তরে কিছু পাওয়া যায় তবে সরাসরি একটি রোগের নাম দেয়া হয়। ফলতঃ আমাদের শারীরিক সত্তা খুব শীঘ্রই একটি পৃথক পরিচয় অর্জন করে যাকে একটি স্বাধীন সত্তা হিসেবে গণ্য করা হয় - যেন শরীরের নিজেরই ক্ষমতা রয়েছে তাকে রোগাক্রান্ত করার বা তাকে বা সুস্থ রাখার। কি আশ্চর্য!
দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ীকে যেভাবে গ্যারেজে নিয়ে মেরামতের চেষ্টা করা হয় একজন রোগীকেও সেভাবে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয় হাসপাতাল-ক্লিনিকে নিয়ে। কিন্তু এভাবে বিধ্বস্ত/রুগ্ন একজন মানুষকে কখনও স্বাস্থ্যে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। অপ্রয়োজনীয় মনে করে হাসপাতালে রোগীর কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলা হতে পারে, কিছু অঙ্গ  সংযোজন/ বিয়োজন করা হতে পারে - শুধুমাত্র যদি ঐ পন্থা অবলম্বন করা হয় অর্থাৎ রোগীর শরীরেই রোগের অস্তিত্ব খোঁজা হয়। কি চমৎকার, মহান এবং সহজ চিকিৎসা ব্যবস্থা!!
শুধুমাত্র রোগীর প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট বিবেচনা করলে আরোগ্য বিধান করা কখনও সম্ভব নয়। কারণ এতে সম্পূর্ণরূপে রোগটিকে চাপা দেয়া হয় যাকে ভুলবশতঃ আমরা আরোগ্য বলে থাকি। প্রকৃতপক্ষে রোগ তার স্থান পরিবর্তন করে। উদাহরণস্বরূপ ত্বকের রোগ স্থানান্তরিত হয় পেশীর রোগে, পেশীর রোগ রূপান্তরিত হয় অস্থির রোগে, আর ত্বক-পেশী-অস্থির রোগে যে জাতীয় চিকিৎসা দেয়া হয় তা অতি শীঘ্রই পরিণত হয় কিডনী-লিভার-ফুসফুস-হৃদযন্ত্র-মস্তিষ্কের রোগে। এটিই চিরন্তন নিয়ম। আক্রান্ত টিস্যু অপসারণ করে বা কেমোথেরাপী দিয়ে কখনও ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব নয়। ক্যান্সার নিজেই শরীরের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রকাশ পায় বা বিস্তার লাভ করে থাকে। অন্যান্য যেকোন রোগের মত ক্যান্সারও রোগীর শরীরে বাসা বাঁধার আগে তা গতিশীল মানবদেহের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্যে উপর আঘাত আনে। সৃষ্টি হয় অভ্যন্তরীন বিশৃঙ্খলা। যাকে যন্ত্র দিয়ে নির্ণয় অসম্ভব। অভ্যন্তরীণ এই বিশৃঙ্খলার নামই রোগ। মৃত শরীরের তো কোন কিছুতে এলার্জি নেই বা তাতে কোন রোগ সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়না। কারণ মৃত মানবদেহের কোন অনুভূতি নেই। মৃত মানবদেহ চিন্তা করতে অক্ষম, এর না আছে কোন ইচ্ছাশক্তি বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখানোর ক্ষমতা। মানুষের মন তথা আত্মা প্রকৃতি থেকে সরাসরি সবকিছু আহরণ করে। এটি বাস্তবতাকে উপলব্ধি করার একটি উপকরণ যার সাহায্য আমরা চিন্তা, অনুভূতির দ্বারা জীবনের সীমাহীন আনন্দকে উপভোগ করে থাকি। যখন আমাদের ইচ্ছাশক্তি নেতিবাচকভাবে আক্রান্ত হয় এবং আমরা ঠিক বা বেঠিক অথবা ভাল বা মন্দের মাঝে পার্থক্য করতে পারিনা জীবনের স্বচ্ছ বিষয়গুলো তখন ঝাপসা-ভোতা-অস্বচ্ছ হয়ে যায়। মানুষ তখন নিজেদের অবহেলা করতে শুরু করে, শুরু করে নিয়ম লঙ্ঘন করতে, তাদের মধ্যে কাজ করে গোপন করার প্রবণতা, তারা মিথ্যা বলে, নিজেকে লুকিয়ে রাখে এবং নিজেদের সাথে করে বিশ্বাসঘাতকতা। তারা সত্যকে গোপন করার চেষ্টা করে এবং শক্তিশালী ও ন্যায়নিষ্ঠ মানুষের অগভীর বা সুপারফিজিয়্যাল ইমেজ ধরে রাখার বৃথা চেষ্টা করে। ফলতঃ তারা নিজেরাই হারিয়ে যায়। যখন কোন অপ্রত্যাশিত সমস্যা দেখা দেয়, তখন অনেক শ্রমসাধ্যে তৈরী করা অনমনীয় দৈহিক কাঠামো, যা লোকেরা ধরে রাখার চেষ্টা করে তা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়ে।
এই উন্মাদ অথচ বাস্তব প্রক্রিয়ার মধ্যে টিকে থাকার জন্য, আমাদের জন্য মঙ্গলদায়ক বস্তুগত বিষয়াদির প্রয়োজন স্বীকার করার আগে আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন যে, আমাদের ভাল-মন্দের জন্য আমরাই দায়ী। আর আমাদের ভাল-মন্দ বোঝার অনুভূতি-ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। আমরা আমাদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে আজ দু’টি চরম পন্থা অবলম্বন করছি। একদিকে আমরা আমাদের আত্মার তথা জীবনের সত্যিকার আনন্দকে অস্বীকার করছি- তাই ভ্রান্তির মাঝে খুঁজছি নিবিড় আনন্দ আর শান্তি। অন্যদিকে অন্ধভাবে আমাদের ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব তথা দেহের প্রতি অন্ধ ভালাবাসা এবং এর যত্নের জন্য নিজেদের সবকিছু বিলিয়ে দিচ্ছি। আমরা নিজেরাই আমাদের মনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছি। আমাদের চলার পথে মনের কোন ভূমিকাই যেন নেই। আমরা নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করার সময় পাইনা ”তুমি কে? তোমার উৎস কি? তুমি কোথা হতে এলে? তোমার গন্তব্য কোথায়? তোমার বাস্তবতা কি? গন্তব্যে পৌঁছাতে তোমার ভূমিকা কি? তোমার নিজের এবং নিজের শরীরের প্রতি দায়িত্বই বা কি?”
সৃষ্টিকর্তা আমাদের এক আশ্চর্যজনক জীবন দান করেছেন। এটি প্রস্তুত, আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আত্মা একটি সুন্দর স্থানে বাস করে তার যত্ন নেয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। আর তা করলেই আমরা আমাদের জীবনকে সুখী-সমৃদ্ধ করতে পারি। পারি নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এখন সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে আমরা কি চাই সে বিষয়ে।
সকল সৃষ্টজীবের মধ্যে মানুষকেই কেবল দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে জটিলভাবে তৈরী করা হয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই বাইনারী বা দ্বৈত পরিচয়ের অনেক প্রমাণ আছে। আমাদের অসুস্থতা প্রকাশের ধরণটিকেও এটি প্রভাবিত করে। একজন রোগী বলতে পারেন – ”আমার মাথাব্যথা আছে, আমার পা ভারী বোধ হয় কিন্তু আমি নিজেকে শান্ত ও সুখী মনে করি।” ”আমি মিষ্টি জাতীয় খাবার পছন্দ করি কিন্তু আমার সেগুলি হজম হয়না।” ”আমার কোষ্ঠকাঠিন্য আছে”। ”আমার ঘাড় শক্ত বোধ হয়, আমি হতবুদ্ধি বোধ করি”।
আমরা আবারও ”আমি” এবং ”আমার” শব্দ দু’টি ব্যবহার করি। আমরা আমাদের দৈহিক সত্ত্বাকে স্পর্শ করতে পারি, স্পর্শ করে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারি। কিন্তু আমরা সবাই সতেচন যে, আমরা এই ”আমি” কে কখনও স্পর্শ করতে পারিনা। বা স্পর্শ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পারিনা। এর কাছে আসার বা একে স্পর্শ করার একমাত্র উপায় হলো- একটি বন্ধুত্বপূর্ণ শব্দের মাধ্যমে বা কিছু শুভেচ্ছাসূচক চিহ্নের দ্বারা। এটি জীবনের গতিশীল অস্তিত্বকে নির্দেশ করে যা কখনও এক্সরে বা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা সনাক্ত করা সম্ভব নয়। আত্মার অস্তিত্বকে অনুভব বা স্পর্শ করা যায় কেবল অন্য একটি আত্মার দ্বারা। আর আত্মার কল্যাণ চাওয়ার দায়িত্ব আমাদেরই।
উদাহরণস্বরূপ, হাসপাতালে একজন মরণাপন্ন রোগী আছেন যিনি অসহ্য ব্যথা ও যন্ত্রণা ভোগ করছেন। কোন ঔষধই তার ব্যথা-কষ্ট উপশম করতে পারছেনা। তার আত্মীয় স্বজনেরা অসহায় বোধ করছেন এবং একমাত্র এই প্রার্থনাই করছেন যে  একমাত্র মৃত্যুই তার যন্ত্রণা লাঘব করবে। আর তাই তারা তার আশু মৃত্যু কামনা করছেন। এমন দৃশ্য আমরা প্রায়শঃ দেখি। প্রতিনিয়ত রোগীর যন্ত্রণা বেড়েই চলে ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না এমন কেউ তাকে দেখতে আসে, সে এমন কেউ যে তার  খুব কাছের, যে তাকে বুঝতে পারে, ভালবাসে। তার এই ভালবাসার বা পছন্দের মানুষটির সাক্ষাতের সাথে সাথেই রোগীর সকল রোগযন্ত্রণার অবসান হয় এবং রোগীটি শেষ যাত্রা পথের দিকে অগ্রসর হয় অর্থাৎ হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে। তখন তার আর কোন ব্যথা-কষ্ট নেই কারণ সে তখন মুক্ত।
এটি বিশ্বাস করা বা না করার কোন প্রশ্ন নয়। এটি হলো বাস্তবতাকে পর্যবেক্ষণের বিষয়। মানবপ্রকৃতির এই দ্বৈত সত্ত্বা যদি সত্য হয় তবে তাদের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশের জন্য আমাদের দুটি ভিন্ন শব্দের দরকার নেই। এবং যদি এটা সত্য হয় যে, ”আমি” আমার শরীরকে বহন করি যেভাবে ”আমার” পরিচয় হিসেবে - তাহলে কেন আমার রোগের কারণ শুধু দৈহিক স্তরে খুঁজি? মন বা আত্মায় কেন খুঁজিনা?

বিএম বেনজীর আহমেদ
কনসাল্টেন্ট হোমিওপ্যাথ
উপ-পরিচালক, পিএটিসি।
Email: drbenojir@gmail.com
Website: drbenojir.com
Cell: +8801733 797252

Wednesday, October 1, 2014

Homeopathy is Scientific: A diarrhoea case analysis

Homeopathy is scientific: A diarrhoea case analysis

To see the case in Bangla click here

Click here for online treatmen.

01অক্টো
A case of Diarrhoea after antibiotics:
Anamnesis: A 40-year old woman previously had pneumonia and took antibiotics 3-weeks ago and has had diarrhoea ever since. she frequently needs to go to the toilet. the evacuation of the stool is noisy and much gas escapes which causes a sputtering noise and soils the whole toilet bowl.  The urge to stool comes on suddenly and usually after she has eaten. The pneumonia started after the death of a relative whom she loved too much. Prior to that, she had no complaints except for a yearly flu, sometimes with high fever. Gastrointestinal complaints are not common in his family. She is very reserved man who does not talk about her emotions. She is chilly and does not feel well in cold damp or foggy weather. Her appetite and thirst are normal. She prefers to eat fish. She sleeps well.
Analysis: The main complaint is on the physical level on a superficial area, the mucous membranes. In all cases of diarrhoea we have to be aware of the danger of possible dehydration, especially in young children and elderly persons. In this case we have to be aware that although the current problem is physical, the original cause is probably an emotional disturbance. The patient, a very reserved woman who does not talk about her emotions, suffered the loss of a relative who she loved very much. Hereafter she developed pneumonia, a complaint whereby an organ is affected in a deeper area of the physical plane than was the case with gastrointestinal complaints.
Personal Medical History: The patient is in a good condition and does not have a history of gastrointestinal complaints. She is susceptible to infrequent acute diseases with high fever and therefore belongs to upper level of health. Both are positive for the prognosis.
Family Medical History: The fact that gastrointestinal complaints are not common in her family is also positive for the prognosis. Otherwise, the hereditary predisposition might make the case more difficult.
Conclusion: In this case the acute physical complaint originates from an emotional cause. The patient probably could not express her grief and the organism became imbalanced due to the stress suffered. It is a good sign that the defence mechanism was able to produce an acute physical disease instead of for instance an emotional symptoms like depression. Nevertheless, the defence mechanism is not strong enough to protect organs and produce a more superficial disease like for instance a skin eruption.
Investigating the case further we notice that there are in fact two causes, the grief after the death of a loved one resulting in pneumonia and the use of antibiotics resulting in the current complaint of diarrhoea. This combination might complicate the case. We might first need to prescribe a remedy to solve the current problem and afterwards need to treat the underlying problem caused by the loss of a loved one. This would mean that two new remedy layers developed. Whether this happens depends on the overall state of health of the patient and the condition of the defence mechanism at the time of the stressor.
As the overall state of health is good and the patient belongs to a higher level, the prognosis is good.
Selection of symptoms, repertorisation (online analysis) and medicine selection:
We chose the following symptoms:
  1. Mind – reserved
  2. Stool – noisy
  3. Stool – flatulent
  4. Stool – sputtering
  5. Generals – Heat – lack of Vital heat
  6. Generals – weather – cold weather – wet – aggravates
  7. Generals – food and drinks – fish – desire
  8. Rectum – Urging – sudden
  9. Rectum – diarrhoea – drugs – after
  10. Generals – History – personal – antibiotics – use of
  11. Generals – Medicine – Allopathic – abuse of
From the online repertorisation we found that the top ten remedies were: Nat-s, Tub, Nat-m, Lach, Sulph, Agar, Aloe, Calc. Nit-ac, Ferr.
But Nat-s Scores the best on totality and keynotes. The Psychological essence also fits the case. Nat-s also fits the chronic symptoms, the generals of the patients. This means that the remedy is similar to the acute condition as well as the chronic.
Choice of potency and course of treatment: As the patient belongs to the highest level of health we can use almost any potency to start the treatment. Because he seems to be rather sensitive it is better to be careful and not to start too high. After taking 3 doses of 30 in two days all complaints disappeared. There was no relapse for the next 10 years.
What a successful case!!!!!!!!!!!
Learning Point: We have learnt that how an emotional problem causes disease in the physical level and how quickly it can be cured with proper homeopathic treatment.

Dr. BM Benojir Ahmed
Consultant Homeopath
Cell: +8801733797252
Email: drbenojir@gmail.com